মোরগ পোলাও রান্নার সহজ রেসিপি (Easy Chicken Polao Recipi)



toc) #title=(Table of Content)

আসসালামু আলাইকুম আজকের আয়োজনে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো মোরগ পোলাও এর রেসিপি। অনেকের কাছের মোরগ পোলাও রান্না করা ঝামেলার মনে হয় এবং রান্না পারফেক্ট হয় না। 

যারা এই সমস্যার কারণে মোরগ পোলাও রান্নাটি করতে ভয় পান, তাদের জন্য আজকে এই সহজ পোলাও রেসিপি। তো চলুন শুরু করি কিভাবে দ্বিগুণ স্বাদে এবং সহজে মোরগ পোলাও রান্না করা যায়।

মোরগ পোলাও রেসিপি উপকরণসমূহ

  • বাসমতি চাল ৩ কাপ
  • মুরগির মাংস ৫০০ গ্রাম
  • পেঁয়াজ কুচি ২ টেবিল চামচ
  • আদা কুচি ১ চা চামচ
  • রসুন বাটা ১ চা চামচ
  • জয়ফুল গুড়া ১/২ চামচ
  • ধনিয়া পাতা কুচি ১ টেবিল চামচ
  • দারুচিনি এক টুকরা
  • কাজুবাদাম ১০ থেকে ১৫ টি
  • সাদা মরিচ গুঁড়া ২ চা চামচ
  • সাদা মরিচ বাটা ১ চা চামচ
  • গরম মসলা পাউডার ১/২ চা চামচ
  • মরিচ গুঁড়া ১/২ চা চামচ
  • তেল ১ কাপ
  • লবণ স্বাদমতো

রান্নার নির্দেশসমূহ

ধাপ ১

রাজকীয় স্বাদে কিন্তু একদম অল্প মসলায় মোরগ পোলাও এর রেসিপি রান্না করার জন্য আমি এখানে একটা চিকেন নিয়ে সেটাকে চার টুকরো করে কেটে নিয়েছি এবং চিকেনের হারের দিকটায় একটু ডিপ করে ভিতর থেকে কেটে নিলে ভালো হবে। 

এতে করে যখন এটাকে রান্না করা হবে, তখন এটা ছড়িয়ে যাবে না। এবার এর মধ্যে দিয়ে দিবেন আধা কাপের মতো টক দই এবং বাদাম বাটা, এখানে ২ টেবিল চা চামচ বাদাম বাটা দিতে পারেন। 

আপনারা যেকোন বাদাম নিতে পারেন। এরপরে তার মধ্যে ধুনিয়ার গুড়ো এবং মরিচের গুঁড়া এক চা চামচ দিবেন। এটা আপনারা অবশ্যই নিজেদের স্বাদ অনুযায়ী দিবেন এবং লবণও দিয়ে দিবেন স্বাদ অনুযায়ী।

আরো পড়ুন - সহজ চিকেন বিরিয়ানি রেসিপি (Easy Chicken Biryani Recipe)

ধাপ ২

এরপর আপনি দিয়ে দিবেন তিন চামচের মতন রোস্টের মসলা। রোস্টের মসলা দিলে পোলাওয়ের স্বাদ বৃদ্ধি পায়। আপনি যেকোনো ধরনের রোস্টের মশলা ব্যবহার করতে পারেন, চাইলে আপনি এটি ঘরেও তৈরি করে নিতে পারেন। 

এবার চিকেনটাকে ভালোভাবে মেখে নিয়ে আধা ঘণ্টার মতন মেরিনেট করে রেখে দিবেন, যাতে করে সুন্দর করে মশলাটা মাংসের ভিতর পর্যন্ত পৌঁছায়। আধা ঘন্টা পর চিকেন গুলো আপনার রান্নার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে। 

ধাপ ৩

একটি প্যানে দিয়ে দিবেন আধার কাপ সয়াবিন তেল এবং এক টেবিল চা চামচ ঘি, সাথে দিয়ে দিবেন দুটো দারুচিনি, চার থেকে পাঁচটা এলাচ, তেজপাতা পাঁচ থেকে ছয়টা, এক চা চামচ কালোজিরা। সবগুলো একসাথে তেল বা ঘি এর সাহায্যে একটু ভেজে নিবেন। যতক্ষণ না পর্যন্ত একটি সুন্দর সুগন্ধ ছড়াবে। এতে করে খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি পায়।

এরপর এর সাথে দিবেন এক কাপ পরিমাণ পেঁয়াজ কুচি। এটাকে তেলের সাথে ভালোভাবে ভেজে নিবেন, যখন বাদামি একটি কালার চলে আসবে তখন উঠিয়ে রাখবেন। এরপর মেরিনেট করা মে মাংস রাখা ছিল সেটি দিয়ে দেবেন গরম তেলে। 

এরপর পেস্ট করে রেখে দেওয়া মসলা মাংসের সাথে দিয়ে দিতে হবে। দেয়া হয়ে গেলে ভালো করে ভেজে নিবেন। দুপাশ উল্টে মাংসগুলো ভালোভাবে ভেজে নিতে হবে। মোরগ পোলাও এর মাংস আলাদা করে ভেজে নেবার কোন প্রয়োজন নেই, মসলার সাথে মাখানো মাংস তেলে ভেজে নিলেই যথেষ্ট। 

ধাপ ৪

এরপর তিন কাপ পরিমাণ পানিতে ঢাকনা দিয়ে দিবেন। পানির পরিমাণটা মুরগি সেদ্ধ হতে যতটুকু পরিমাণ প্রয়োজন আপনি ততটুকু বুঝিয়ে দিবেন। মাংসটি সেদ্ধ হয়ে এলে যখন তেলটা উপরে চলে আসবে এবং মসলা মাখামাখা থাকবে তখন এর উপরে দিয়ে দিবেন এক চা চামচ চিনি এবং ২ চা চামচ গুঁড়ো দুধ। 

গুঁড়ো দুধের পরিবর্তে আপনার বাসায় মাওয়া থাকলে সেটাও ব্যবহার করতে পারেন। এরপরে দিয়ে দেবেন পাঁচ থেকে ছয়টা আস্তা কাঁচামরিচ। সবকিছু দেওয়া হয়ে গেলে এক থেকে দুই মিনিট ঢাকনা দিয়ে ডেকে কম তাপে রেখে দিবেন। এরপর মাংসগুলো মসলার সাথে একটু নাড়িয়ে দুপাশ উল্টে নামিয়ে নিবেন।

এরপরে আমরা চলে যাব মোরগ পোলাওয়ের পোলাও রান্নার জন্য। একটি হাড়িতে দুই টেবিল চামচ সোয়াবিন তেল দিয়ে তেলের মধ্যে এক টুকরো এলাচ, দারুচিনি এবং একটি তেজপাতা আর চারটি লবঙ্গ দিয়ে হালকা ভেজে নিবো। এতে করে একটি ভালো সুগন্ধ আসবে আর খেতেও ভালো লাগবে। 

ধাপ ৫

এরপর দিয়ে দেবেন আগে থেকে ধুয়ে শুকিয়ে রাখা পোলাও এর চাল। এরপর চালের সাথে দিয়ে দেবেন আদা-রসুন বাটা এক চা চামচ এবং স্বাদমতো লবণ। এরপর চাল গুলোকে মসলার সাথে ভালো করে মিশাতে হবে। 

এখন খুব ভালোভাবে ভেজে নিতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না চাল থেকে একটা ভালো সুগন্ধ ছড়ায়। এবার আপনি প্রতি এক কাপ চালের জন্য পান নিতে পারেন দুই কাপ পর্যন্ত। এখানে যেহেতু তিন কাপ চাল নেওয়া হয়েছে তো তিন কাপ চালের জন্য ছয় কাপ পানি নেওয়া সঠিক। 

আপনি এখানে ৬ কাপ পানির জায়গায় ৫ কাপ পানি নিয়ে এক কাপ লিকুইড গরুর দুধ ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আরো ভালো স্বাদ চলে আসবে। এরপর আপনি চারদিকে ভালোভাবে নাড়িয়ে নিবেন। যতক্ষণে চালের ব্লক না আসবে ঢাকনা না দিলেও হবে। 

ধাপ ৬

এরপরে, ব্লক আসার পরে ঢাকনা দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দেখে রাখবেন ৯ থেকে ১০ মিনিটের মত। আপনারা চাইলে হাঁড়ির নিচে তাওয়া ব্যবহার করতে পারেন। 

এরপর ৯ থেকে ১০ মিনিট পরে টাকা উঠিয়ে পোলাওটাকে ভালোভাবে নাড়িয়ে আবার ঢাকনা দিয়ে দমে রেখে দিবেন ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মত। এর মধ্যে পোলাটা আশা করি ভালোভাবে ঝরঝরে হয়ে যাবে।

এরপরে অর্ধেক পরিমাণ পোলাও জন্য একটি বাটিতে তুলে নিয়ে তৈরি করা চিকেন গুলোকে পোলাও এর উপর সাজিয়ে দিয়ে দিবেন এবং চিকেনের সাথে মসলাগুলো দিয়ে দিবেন। 

ধাপ ৭

যেহেতু পোলাও রান্না করার জন্য তেল কম ব্যবহার করতে বলেছি , সেই জন্য এখানে মাংসের তেলটুকু মসলাসহ দিয়ে দিবেন। মসলা দিয়ে উপরে কয়েকটি আলুবোখারা, কিছু কিসমিস, কিছু বাদাম এবং বেরেস্তা ছড়িয়ে দিবেন, সাথে কয়েকটি আস্তা কাঁচা মরিচ দিয়ে দিবেন। 

এতে করে পোলাও থেকে ভালো সুগন্ধ আসবে। এরপরে বাটিতে তুলে রাখা পোলাও গুলো উপরে দিয়ে দেবেন। পোলাও দেওয়ার পর উপরে এক চা চামচ ঘি দিতে পারেন, সাথে কেওড়া জলও দিতে পারেন। এটি আপনি দিতেও পারেন আবার না দিতেও পারবেন। 

এরপরে ঢাকনা দিয়ে ছয় থেকে সাত মিনিটের জন্য রেখে দিবেন। চুলার আঁচ কিন্তু কম থাকতে হবে। আলতোভাবে পোলাওয়ের সাথে মাংস ভালোভাবে মিশিয়ে নিবেন। ব্যাস তৈরি হয়ে গেল রাজকীয় স্বাদের মজাদার মোরগ পোলাও।

শেষ কথা

পোলাও রান্না করা অনেকটাই কঠিন। কখনো নরম আর কখনো শক্ত। তাই যে পাত্র বা কাপ দিয়ে চাল মাপবেন তার দ্বিগুণ পানি পোলাওয়ের চাল ফোটাতে ব্যবহার করবেন এবং হাঁড়িতে পানি ৪/৫ ব্লক ওঠার পর পোলাওয়ের চাল দিবেন।

তাহলেই পোলাও ঝরঝরে হবে। আর পোলাও রান্না করতে এবং দম দিতে মোটা তলযুক্ত হাঁড়ি ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। মোটা তল যুক্ত হাড়ি না থাকলে হাঁড়ির নিচে তাওয়া দিয়ে রান্না করবেন তাহলে তলায় লেগে যাবেনা।

আশা করছি আপনাদের এই রেসিপিটি ভালো লেগেছে। এই রেসিপি তৈরি করতে সর্বোচ্চ এক ঘন্টা সময় লাগতে পারে। রেসিপিটি ভালো লাগলে, এ রকম আরো সহজ উপায়ে সুস্বাদু রেসিপি পেতে নিয়মিত ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। ধন্যবাদ। 





#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Ok, Go it!