রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত

রমজান মাস এই পবিত্র রমজান মাসটি আমাদের সকলকে সাধ্যমত ইবাদত বন্দেগি করার জন্য উৎসাহিত করে। সকল উম্মতের উপর আল্লাহ’তালা রোজা ফরজ করে দিয়েছেন। যদি কোন উম্মত রোজাকে অস্বীকার করে তাহলে তার ইমান থাকবে না। সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে। এছাড়াও শরীয়তের ভাষায় মৌলিক ফরজ রোজা ভঙ্গকারী ইসলামের বিনষ্টকারী রূপে গণ্য। 

আরও বলা হয়েছে যদি কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা ভঙ্গ করে এবং তার পরিবর্তে সারা জীবন রোজা রাখে তাহলেও সেই রোজার ক্ষতিপূরণ দিতে পারবে না। অর্থাৎ রমজান মাস আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। এই মাসে বেশি বেশি করে আল্লাহর ইবাদত করতে হবে। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আলোচনা করা হবে রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত। 

toc) #title=(Table of Content)

রমজান মাসের ফজিলত ও গুরুত্ব

আমাদের ইসলাম ধর্মে মৌলিক পাঁচটি স্তম্ভ রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রমজান মাসের রোজা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত অত্যাধিক মর্যাদা সম্পন্ন। আমাদের জীবন সুন্দর ও আলোকিত করে গড়ে তুলতে রহমত,মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে আসে মাহে রমজান। ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে আমাদের জীবনে রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি।

  • মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন রমজান মাস হচ্ছে সারা বছরের মধ্যে শ্রেষ্ঠ একটি মাস। রমজান মাসের ফজিলত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • ফরজ নামাজ ও রোজা, এশার নামাজের পর তারাবিহ পড়া, সেহরির আগে তাহাজ্জুদ পড়া, যথাসম্ভব জিকির ও কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত করে সময় কাটানো উচিত। 
  • নামাজ পালনের সঙ্গে দান সাদকা করা, আশেপাশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের হক আদায় করা বাঞ্ছনীয়।    
  • রমজান মাসে অসংখ্য মানুষের দোয়া কবুল ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। 
  • অশ্লীলতা, ধোঁকাবাজি, প্রতারণা, অন্যের হক খাওয়া, সুদ ও জুয়াসহ সকল প্রকার হারাম কাজ থেকে তো সারা বছরই বেঁচে থাকা ফরজ। তবে রমজান মাসে এর ফজিলত অপরিহার্যভাবে বেড়ে যায়।

তাই আমাদের সকলের উচিত রমজান মাসের রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে এবং গুরুত্ব সম্পর্কে সঠিক ধারণা লাভ করা এবং সেই অনুযায়ী জীবন যাপন করা।

আরো পড়ুনঃ আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার ৫টি উপায় আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার ৫টি উপায়

রমজান মাসে দোয়া কবুল এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি

রমজান মাসে অসংখ্য মানুষের দোয়া কবুল করা হয়। অসংখ্য জাহান্নামীদের নাম জাহান্নামের তালিকা থেকে মুছে দেওয়া হয় এবং দুজখ থেকে মুক্তির ঘোষণা দেওয়া হয়। আমাদের সকলের উচিত এ মাসে বেশি বেশি করে নেক আমল করা এবং তওবা ইস্তেগফার করা ও রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত অনুযায়ী ইবাদত করা। জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাইতে হবে এবং যাবতীয় দরখাস্ত আল্লাহর দরবারে পেশ করতে হবে, সকল চাওয়া পাওয়া আল্লাহর কাছে বলতে হবে। 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অবশ্যই আল্লাহ তা’য়ালা রমজান মাসের প্রত্যেক দিন ও রাত অসংখ্য ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। হাদিসে উল্লেখ আছে তিন ব্যক্তির দোয়া আল্লাহ তা’য়ালা ফেরত দেন না রোজাদারের দোয়া, ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া, মজলুমের দোয়া।(মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৭৪৫০)

রমজান পাপ মোচন ও গুনাহ থেকে ক্ষমা লাভের মাস। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে আরেক জুমা এবং এক রমজান থেকে আরেক রমজান মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহগুলো মুছে দেয় যদি সে কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৩৩)

আরো পড়ুনঃ নামাজের ফরজ ও ওয়াজিব

রমজানের ফজিলত 

আল্লাহ তাআলা আমাদের রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত অনুযায়ী আমল করার তৌফিক দান করুন। রমজানের বিশেষ কিছু ফজিলত আলোচনা করা হলো। 

১. রমজান মাসের রোজার প্রতিদান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বিনা হিসাবে দিবেন এবং নিজেই দিবেন। 

كل عمل ابن آدم يضاعف الحسنة بعشر أمثالها إلى سبعمائة ضعف، قال الله تعالى : الا الصوم فإنه لى وانا أجزى به يدع شهوته وطعامه من أجلى.

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন, মানুষের প্রত্যেক আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি করা হবে। একটি নেকির সওয়াব দশগুণ থেকে সাতাশ গুন পর্যন্ত হবে। আল্লাহ’তালা ইরশাদ করেন, কিন্তু রোজা আলাদা। কেননা তা একমাত্র আমার জন্য, এবং আমি নিজেই এর বিনিময় প্রদান করব। বান্দা একমাত্র আমার জন্য নিজের প্রবৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং পানাহার পরিত্যাগ করেছে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস:১১৫১,(১৬৪)

২. আল্লাহ তা'আলা রোজাদারকে কেয়ামতের দিন পানি পান করাবেন।

قال الله تعالى : الصيام لى وانا اجزى به ... فان لهم يوم القيامة حوضا ما يرده غير الصائم،

رواه البزار وذكره الهيثمي في المجمع، (5093)، وقال : رواه البزار، ورجاله موثقون.

হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তা’আলা বলেন, রোজা আমার জন্য। আমি নিজেই এর প্রতিদান দিব। কিয়ামতের দিন রোজাদারদের জন্য একটি বিশেষ পানির ঘর থাকবে। সেখানে রোজাদার ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কারো আগমন ঘটবে না। (মুসনাদে বাযযার,হাদীস:৮১১৫)

৩. রোজা হচ্ছে জান্নাত লাভের একটি পথ। 

عن أبي أمامة قال : أتيت رسول الله صلى الله عليه وسلم، فقلت : مرني بعمل يدخلني الجنة، قال : عليك بالصوم، فانه لا عدل له، ثم أتيته الثانية، فقال لي : عليك بالصيام.

হযরত আবু উমামা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল (সা:) এর দরবারে আগমন করে বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আমাকে এমন একটি আমল বলে দিন যার দ্বারা আমি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবো। তিনি বলেন, তুমি রোজা রাখো কেননা এর সমতুল্য অন্য কিছু নেই। (মুসনাদে আহমদ,হাদীস:২২১৪৯)

৪. রোজা জাহান্নাম থেকে রক্ষাকারী ঢাল ও দুর্গ। 

الصيام جنة من النار كجنة احدكم من القتال،

উসমান ইবনে আবিল আস (রা.) বর্ণনা করেন যে, আমি রাসূল (সা:) কে বলতে শুনেছি, রোজা হচ্ছে জাহান্নাম থেকে রক্ষাকারী ঢাল, (শত্রুর আঘাত হতে রক্ষাকারী) যুদ্ধক্ষেত্রে তোমাদের ঢালের মতো। (মুসনাদে আহমদ, হাদীস:১৬২৭৮)

৫. রোজাদারঘন জান্নাতে প্রবেশ করবেন ‘রাইয়ান’ নামক বিশেষ দরজা দিয়ে। 

ان للصائمين بابا فى الجنة يقال له : الريان، لا يدخل منه غيرهم اذا دخل آخرهم اغلق، ومن دخل منه شرب، ومن شرب منه لم يظمأ ابدًا.

قال الترمذى : هذا حديث حسن صحيح غريب.

হযরত সাহল ইবনে সা'দ হতে বর্ণিত, রাসূল (সা;) ইরশাদ করেছেন, রোজাদার ব্যক্তিদের জন্য জান্নাতে একটি বিশেষ দরজা রয়েছে, যার নাম ‘রাইয়ান’। রোজাদার ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ এই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। যখন সর্বশেষ রোজাদার ব্যক্তি তাতে প্রবেশ করবে, তখন সেই দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। যে ব্যক্তি এই দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে, যে জান্নাতের পানীয় পান করবে। আর যে পান করবে, সে কখনো পিপাসার্ত হবে না। (মুসনাদে আহমদ, হাদীস:২২৮৪২)

আরো পড়ুনঃ ইসলামে যেভাবে ঘুমানো নিষেধ এবং যেভাবে ঘুমানো উত্তম

৬. রোজা কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে। 

الصيام والقرآن يشفعان للعبد يوم القيامة، يقول الصيام : اى رب منعته الطعام والشهوة فشفعنى فيه، ويقول القرآن : منعته النوم بالليل، فشفعنى فيه، قال : فيشفعان له.

رواه أحمد، والحاكم فى المستدرك وقال : صحيح على شرط مسلم، ووافقه الذهبي، وذكره الهيثمي فى المجمع، وقال : رواه أحمد والطبرانى فى الكبير، ورجال الطبرانى رجال الصحيح.

হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন, কুরআন ও রোজা কেয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, হে রব,আমি তাকে খাদ্য ও যৌন সম্ভোগ থেকে বিরত রেখেছি। অতএব, তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কুরআন বলবে, হে রব, আমি থাকে রাতের ঘুম থেকে বিরত (তেলাওয়াত করেছে) রেখেছি। অতএব, তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। রাসূল (সা:) বলেন,অত:পর তাদের উভয়ের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে। (মুসনাদে আহমদ,হাদীস:৬৬২৬)

৭. রোজাদারের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়।

من صام رمضان ايمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه،

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রমজান মাসের রোজা রাখবে, তার পূর্ববর্তী গুনা সমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (সহীহ্ বুখারী,হাদীস:৩৮,২০১৪)।

৮. রোজাদারের মুখের গন্ধ মিশকের চেয়েও সুগন্ধি। 

والذى نفس محمد بيده لخلوف فم الصائم اطيب عند الله من ريح المسك،

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন, সেই সত্তার শপথ, যার হাতে মুহাম্মদের জীবন, রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর নিকট মিশকের সুগন্ধির চেয়েও অধিক সুগন্ধিময়। (সহীহ বুখারী,হাদীস:১৯০৪,সহীহ্ মুসলিম, হাদীস:১১৫১)।

৯. রোজা গুনাহের কাফফারা।

فتنة الرجل فى اهله وماله ونفسه وولده وجاره تكفرها الصلاة والصيام والصدقة والأمر بالمعروف والنهى عن المنكر.

হযরত হুযায়ফা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন, মানুষের জন্য তার পরিবার, ধন সম্পদ, সন্তান সন্ততি, তার আত্না ও প্রতিবেশী ফিতনা স্বরুপ। তার কাফফারা হচ্ছে, রোজা, নামাজ, দান সদকা, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ। (সহীহ্ বুখারী,হাদীস:৫২৫,১৮৬৫)

১০. রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দের মুহূর্ত। 

للصائم فرحتان يفرحهما اذا افطر فرح، واذا لقى ربه فرح بصومه، وفى رواية : اذا لقى الله فجزاه فرح،

রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত হচ্ছে, হযরত আবু হুরায়রা  (রা.) হতে বর্ণিত রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন, রোজাদারদের জন্য রয়েছে দুটি আনন্দের মুহূর্ত। 

  • যখন রোজাদার ব্যক্তি ইফতার করেন,তখন ইফতারের কারণে আনন্দ পান। 
  • যখন সে তার রবের সাথে মিলিত হবে তখন তার রোজার কারণে আনন্দিত হবে। 

(সহীহ বুখারী,হাদীস:১৯০৪,১৮৯৪)

আরো পড়ুনঃ কিভাবে দোয়া করলে আল্লাহ কবুল করবেন

১১. রোজাদারঘন পরকালে সিদ্দীকীন ও শহীদগনের দলভুক্ত থাকবে। 

جاء رجل الى النبى صلى الله عليه وسلم فقال : يا رسول الله! أرايت ان شهدت ان لا اله الا الله وانك رسول الله، وصليت الصلوات الخمس واديت الزكاة وصمت رمضان وقمته فممن أنا؟ قال : من الصديقين والشهداء،

হযরত আমর ইবনে মুররা আলযুহানী (রা.) হতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূল (সা:) এর দরবারে এসে বললো! ইয়া রাসূলল্লাহ্, আমি যদি এক কথায় সাক্ষী দেই যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই এবং আপনি আল্লাহর রাসূল। আর আমি যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি, যাকাত প্রদান করি, রমজান মাসের সিয়াম ও কিয়াম (তারাবীসহ অন্যন্যা নফল) আদায় করে তাহলে আমি কাদের দলভুক্ত হবো? তিনি বললেন সিদ্দিকীন ও শহীদগণের দলভুক্ত হবেন। (মুসনাদে বাযযার,হাদীস:২৫),(সহীহ ইবনে খু্যাইমা,হাদীস:২২১২)।

১২. রোজা হিংসা বিদ্বেষ দূর করে দেয়।

صوم شهر الصبر وثلاثة أيام من كل شهر يذهبن وحر الصدر،

وقال المنذرى : ورجاله رجال الصحيح، ورواه احمد وابن حبان والبيهقى الثلاثة من حديث الأعرابى ولم يسموه، (اى ابن عباس)

হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) হতে বর্নিত যে, রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন, সবরের রমযান (মাস) মাসের রোজা এবং প্রতি মাসের তিন দিনের (আইয়্যামে বীয) রোজা অন্তরের হিংসা বিদ্বেষ দূর করে দেয়। (মুসনাদে বাযযার-হাদীস:১০৫৭)

১৩. রোজাদারের দোয়া কবুল হয়। 

إن للصائم عند فطره لدعوة ما ترد.

قال البوصيرى : اسناده صحيح

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে অমর রা: হতে বর্ণিত রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন, ইফতারের সময় রোজাদার ব্যক্তি যখন দোয়া করে, তখন তার দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। সেই দোয়া কবুল হয়। (সুনানে ইবনে মাজাহ্, হাদীস:১৭৫৩)

১৪. আল্লাহর নৈকট্য লাভের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম রোজা। 

عن أبى أمامة قال : قلت  يا رسول الله! مرنى بعمل قال : عليك بالصوم فإنه لا عدل له قلت : يا رسول الله! مرنى بعمل قال : عليك بالصوم، فانه لا عدل له.

হযরত আবু উমামা (রা:) হতে বর্ণিত, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ আমাকে কোন আমলের আদেশ করুন। তিনি বললেন, তুমি রোজা রাখো, কেননা এর সমতুল্য কিছু নেই। আবার বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্, আমাকে কোন নেক আমলের কথা বলুন, উওরে বললেন, তুমি রোজা রাখো, এর সমতুল অন্য কিছু নেই। (সহীহ ইবনে খু্যাইমা, হাদীস:১৮৯৩)।

আরো পড়ুনঃ অর্থ সঞ্চয়ের বিষয়ে ইসলাম কি বলে

শেষ কথা

আশা করছি আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি জানতে পেরেছেন রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে। যেহেতু অন্যান্য মাস থেকে রমজান মাসের গুরুত্ব এবং ফজিলত বেশি, তাই আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে রমজান মাসের বেশি বেশি করে নেক আমল করার তৌফিক দান করুক। এবং আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত অনুযায়ী আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

আরো পড়ুনঃ মহানবী (সা.) এর প্রিয় খাবার

রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর / FAQ

প্রশ্ন: রোজা রেখে কি কি করা যায় না? 

উত্তর:- রোজা রেখে করা যায় না এমন কাজ হচ্ছে, 

  • মাগরিবের আযানের আগে ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু খাওয়া যাবেনা। 
  • ফরজ গোসল করার সময় গড়গড়া ও নাকের একদম ভিতরে পানি পৌঁছানো যাবেনা। (স্বাভাবিকভাবে নাক পরিষ্কার ও কুলি করবেন) 
  • সিগারেট, বিড়ি, কোন ধরনের ধূমপান করা যাবে না। 
  • রোজা রাখা অবস্থায় স্বামী স্ত্রী সহবাস করা যাবে না। 
  • রোজা থাকা অবস্থায় মুখ ধারা ঔষধ যেমন করা যাবে না। (এক কথায় রোজা থাকা অবস্থায় কোন কিছু খাওয়া যাবে না)। 

প্রশ্ন: রমজান কেন আসে? 

উত্তর:- রমজান এমন এক মাস যার প্রথম অংশে মহান আল্লাহ তা’লার রহমত বর্ষিত হয়। যার ফলে মানুষের গুনাহের গভীর অন্ধকার থেকে বের হয়ে আসার এবং ইবাদত করে পবিত্র হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এই মাসের মধ্যভাগে পাপ থেকে মুক্তি লাভ হয় এবং এবং শেষ অংশে জাহান্নামের যন্ত্রণাদায়ক স্থায়ী আজাব থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।

প্রশ্ন: রমজানের প্রথম দিন কি বলতে হয়?

উত্তর:- পুরো বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের কাছে পরিচিত একটি শব্দ, রমজান মোবারক। যার অর্থ বরকতময় রমজান। 

প্রশ্ন: রমজানের ইতিহাস? 

উত্তর:- প্রাচীন আরবদের ক্যালেন্ডারের অংশ রমজান, শব্দটি আরবি শব্দ যা 'জ্বলন্ত তাপ' বা 'শুষ্কতা'। 7ম শতাব্দীতে এর উৎপত্তির পর থেকে, রমজান আল্লাহর সাথে বন্ধন বাড়ানোর একটি সময়। রমজান মাসে, মুসলমানরা রোজা, কোরআন তেলাওয়াত এবং নিঃস্বার্থ ভালো কাজ করার মাধ্যমে এটি আদায় করেন।



#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Ok, Go it!